০৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

গাজায় শিশুদের একবেলা খাবারও জুটছে না, আরও ৯২ জনের মৃত্যু

  • প্রকাশের সময় : ১১:২৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • 1

ফটো সংগৃহিত

ইসরায়েলের অবরোধ ও অব্যাহত বিমান হামলায় বিপর্যস্ত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি শিশুরা একবেলার খাবারও পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সেখানে কর্মরত ১২টি আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার নেতারা। গত বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জানান, ১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি সামরিক অভিযান এবং গত মাসে আরোপিত সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজার মানবিক সহায়তা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।

এদিকে গত দুদিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৯২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, প্রায় ১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় কমপক্ষে ৫১ হাজার ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন। ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও স্থাপনার ধ্বংসস্ত‚পে এখনো ১০ হাজারের বেশি মরদেহ পড়ে আছে। ভারী উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ও অব্যাহত হামলার কারণে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছাতে না পারায় এসব দেহাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

১২টি আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, ভয়াবহ ও নির্বিচার বোমাবর্ষণের কারণে গাজায় চলাচল অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সেখানে কাজ করা ৪৩টি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সহায়তা সংস্থার মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশই তাদের কার্যক্রম স্থগিত বা সীমিত করেছে।

অক্সফামের নীতিনির্ধারণী প্রধান বুশরা খালিল বলেন, শিশুরা দিনে একবেলারও কম খাবার পাচ্ছে। তাদের জন্য এখন খাবার জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। শুধু টিনজাত খাবার খেয়ে বেঁচে আছে তারা… অপুষ্টি এবং ক্ষুধার্ত অঞ্চলের সংখ্যা বাড়ছেই।

আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ডক্টরস উইদআউট বর্ডারসের গাজা অঞ্চলের জরুরি সমন্বয়কারী আমান্ডে বাজরোল বলেন, সহায়তাকর্মীরা চোখের সামনে মানুষকে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু— কষ্ট পেয়ে মারা যেতে দেখছেন অথচ তাদের হাতে পর্যাপ্ত সামগ্রী নেই। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী ফুরিয়ে আসায় সহায়তা কার্যক্রম চালানো এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এটা মানবিক বিপর্যয় নয়— এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, একটি জাতির বেঁচে থাকার সক্ষমতার ওপর ইচ্ছাকৃত আঘাত, যা অবাধে এবং শাস্তিহীনভাবে চলছে।

শুক্রবার গাজা শহর থেকে আলজাজিরার হানি মাহমুদ জানান, শিশুখাদ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যের অভাবে শিশু ও নবজাতকরা চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বহু শিশুকে পুষ্টিহীনতায় ভুগতে দেখেছি। পরিবারগুলো তাদের ন্যূনতম চাহিদাও মেটাতে পারছে না। বাজার ও ফার্মেসিতে শিশুখাদ্য নেই বললেই চলে। গাজায় সব জরুরি পণ্যের সংকট চলছে।’

দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে আলজাজিরাকে ফিলিস্তিনিরা জানান, তারা অপুষ্টিজনিত কারণে তাদের সন্তানদের হারাচ্ছেন।

নিজের সন্তান হারানো ফাদি আহমেদ বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছেলের ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছিল, যার ফলে তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যায়। তিনি বলেন, দুর্বলতা ও চরম অপুষ্টি তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়… হাসপাতালে এক সপ্তাহ থাকার পর মারা যায় সে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গাজা উপত্যকায় ৬০ হাজারেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। এদিকে ১১ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ৪৫ দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে সংগঠনটি। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানানো হবে। যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যেতে হামাস এখনো তাদের মূল দাবিতে অটল রয়েছে। হামাসের দাবি, গাজায় যুদ্ধ সম্পূর্ণ বন্ধ হতে হবে এবং সেখান থেকে ইসরায়েলের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

এর আগে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, ইসরায়েলকে শত্রুতা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে, হামাসের এই দাবি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে পূরণ হয়নি। এ ছাড়া নতুন প্রস্তাবে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনায় হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে।

এস আলমের ৯৯৪৮ কোটি টাকার সম্পদ নিলামে

জগতি চিনিকলের অপমৃত্যু — আমাদের শিকড়ে কোপ:

রাজশাহীতে হাতকরা পরা অবস্থায় আসামী পলায়ন

কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতার বাসায় গুলি

চুয়াডাঙ্গায় ইয়াবাসহ তিন মাদক কারবারি আটক

নাটোরে ভুট্টা ক্ষেত থেকে শিশু জুঁইয়ের মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পুলিশ

শার্শায় ধানক্ষেত থেকে দুটি পাইপগান উদ্ধার

বৈশাখের সন্ধ্যায় মিনিবাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে শিশু নিহত, বাসে আগুন

নিজেকে ছাত্রলীগ দাবির ৪ বছর পর হয়ে গেলেন ছাত্রদলের আহ্বায়ক

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ওয়ার্ড সুবিধার দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্লট দুর্নীতি: হাসিনা, রেহানা, ববির সঙ্গে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপকে গ্রেপ্তারেও পরোয়ানা

মার্চ ফর গাজা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনস্রোত

এশিয়ার ৩ দেশ সফর করবেন শি জিনপিং

নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ, ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত ৩

চারুকলায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব’ পুড়িয়েছে হাসিনার দোসররা: ফারুকী

সিলেটে ‘গাড়ি পার্কিং’ নিয়ে সংঘর্ষ, ৩১ মোটরসাইকেল ভাঙচুর

কুষ্টিয়ার আমলায় জুমার নামাজ শেষে ফিলিস্তিনের পক্ষে দোয়া ও প্রতিবাদ মিছিল

সম্পাদকীয়

চলতি বছর বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন ডলারের ঋণ দেবে এনডিবি

ইহুদিবাদ এবং গাজার ভবিষ্যৎ: সংঘাতের বৃত্ত থেকে মুক্তির খোঁজে

সারা দেশে দোকানপাট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৪৯ জন গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে অভিনব কায়দায় ১০ লক্ষ টাকা ছিনতাই 

গাজায় শিশুদের একবেলা খাবারও জুটছে না, আরও ৯২ জনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১১:২৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ইসরায়েলের অবরোধ ও অব্যাহত বিমান হামলায় বিপর্যস্ত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি শিশুরা একবেলার খাবারও পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সেখানে কর্মরত ১২টি আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার নেতারা। গত বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জানান, ১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি সামরিক অভিযান এবং গত মাসে আরোপিত সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজার মানবিক সহায়তা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।

এদিকে গত দুদিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৯২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, প্রায় ১৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় কমপক্ষে ৫১ হাজার ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন। ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও স্থাপনার ধ্বংসস্ত‚পে এখনো ১০ হাজারের বেশি মরদেহ পড়ে আছে। ভারী উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ও অব্যাহত হামলার কারণে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছাতে না পারায় এসব দেহাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

১২টি আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, ভয়াবহ ও নির্বিচার বোমাবর্ষণের কারণে গাজায় চলাচল অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সেখানে কাজ করা ৪৩টি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সহায়তা সংস্থার মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশই তাদের কার্যক্রম স্থগিত বা সীমিত করেছে।

অক্সফামের নীতিনির্ধারণী প্রধান বুশরা খালিল বলেন, শিশুরা দিনে একবেলারও কম খাবার পাচ্ছে। তাদের জন্য এখন খাবার জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। শুধু টিনজাত খাবার খেয়ে বেঁচে আছে তারা… অপুষ্টি এবং ক্ষুধার্ত অঞ্চলের সংখ্যা বাড়ছেই।

আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ডক্টরস উইদআউট বর্ডারসের গাজা অঞ্চলের জরুরি সমন্বয়কারী আমান্ডে বাজরোল বলেন, সহায়তাকর্মীরা চোখের সামনে মানুষকে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু— কষ্ট পেয়ে মারা যেতে দেখছেন অথচ তাদের হাতে পর্যাপ্ত সামগ্রী নেই। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী ফুরিয়ে আসায় সহায়তা কার্যক্রম চালানো এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এটা মানবিক বিপর্যয় নয়— এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, একটি জাতির বেঁচে থাকার সক্ষমতার ওপর ইচ্ছাকৃত আঘাত, যা অবাধে এবং শাস্তিহীনভাবে চলছে।

শুক্রবার গাজা শহর থেকে আলজাজিরার হানি মাহমুদ জানান, শিশুখাদ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যের অভাবে শিশু ও নবজাতকরা চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বহু শিশুকে পুষ্টিহীনতায় ভুগতে দেখেছি। পরিবারগুলো তাদের ন্যূনতম চাহিদাও মেটাতে পারছে না। বাজার ও ফার্মেসিতে শিশুখাদ্য নেই বললেই চলে। গাজায় সব জরুরি পণ্যের সংকট চলছে।’

দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে আলজাজিরাকে ফিলিস্তিনিরা জানান, তারা অপুষ্টিজনিত কারণে তাদের সন্তানদের হারাচ্ছেন।

নিজের সন্তান হারানো ফাদি আহমেদ বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছেলের ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছিল, যার ফলে তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যায়। তিনি বলেন, দুর্বলতা ও চরম অপুষ্টি তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়… হাসপাতালে এক সপ্তাহ থাকার পর মারা যায় সে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গাজা উপত্যকায় ৬০ হাজারেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। এদিকে ১১ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ৪৫ দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে সংগঠনটি। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানানো হবে। যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যেতে হামাস এখনো তাদের মূল দাবিতে অটল রয়েছে। হামাসের দাবি, গাজায় যুদ্ধ সম্পূর্ণ বন্ধ হতে হবে এবং সেখান থেকে ইসরায়েলের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

এর আগে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, ইসরায়েলকে শত্রুতা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে, হামাসের এই দাবি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে পূরণ হয়নি। এ ছাড়া নতুন প্রস্তাবে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনায় হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে।