
২০১৭ সালে মায়ানমারের জান্তা সরকারের দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম পর্যায়ে তাদের মধ্য থেকে এক লাখ ৮০ হাজারকে ফেরত নেওয়ার উপযুক্ত বলে জানিয়েছে মায়ানমার।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক (বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন) সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই বিবৃতি দেন।
মায়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংও শীর্ষ এই সম্মেলনে যোগ দেন।
রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে এই তালিকা নিশ্চিত করার বিষয়টি বেশ উল্লেখযোগ্য একটি পদক্ষেপ।
শুক্রবার ( ৪ এপ্রিল ) ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে মায়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উচ্চতর প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে এই তথ্য জানান।
সেখানে বলা হয়, মায়ানমার বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া নিবন্ধিত আট লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে এক লাখ ৮০ হাজার জন ফেরত নেওয়ার যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
২০১৮ থেকে ২০২০ সালে বাংলাদেশ ছয় দফায় মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের মূল তালিকা সরবরাহ করে। তার মধ্যে ৭০ হাজার রোহিঙ্গার চূড়ান্ত তালিকার জন্য ছবি-নাম যাচাই করা বাকি রয়েছে। এছাড়া, বাকি সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হবে বলে জানায় মায়ানমার।
গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর ২০১৭ সালের নৃশংস অভিযানের জন্য মিন অং-এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চায়। সেখানে বলা হয়, প্রায় সাত লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যা এড়াতে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এটিকে সবসময় গণহত্যা বলেই বর্ণনা করেছে।
রোহিঙ্গারা মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আদিবাসী। কিন্তু বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির একের পর এক শাসকগোষ্ঠী তাদের অন্যান্য অধিকারের পাশাপাশি দেশের নাগরিকত্বও অস্বীকার করে আসছে।