সারাদেশে চলছে এসএসসি পরীক্ষা। যেখানে অনেক শিক্ষার্থীর পাশে পরীক্ষাকেন্দ্রে বাবা-মা থাকছেন সাহস ও উৎসাহ জোগাতে, সেখানে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার এক শিক্ষার্থীর গল্প যেন ভিন্ন এক সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি।
জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের ছোট ঘাগটিয়া গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী খাদিজা আক্তার তৃশা মঙ্গলবার জীবনের এক হৃদয়বিদারক মুহূর্তে অংশ নেন পরীক্ষায়। তার বাবা, কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সোমবার রাতে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই পরদিন সকালে এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষায় অংশ নেন তৃশা। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে পুরো এলাকা, যেখানে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
খাদিজা আক্তার তৃশা জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তিনি জানান, “আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমি লেখাপড়া শিখে একজন আদর্শ শিক্ষক হবো। বাবার মৃত্যু আমাকে ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণের আশায় আমি পরীক্ষা দিতে গিয়েছি। আল্লাহর রহমতে ভালোই হয়েছে। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।”
তৃশার শিক্ষক বিধান ভূষণ চক্রবর্ত্তী বলেন, “তৃশা আমাদের স্কুলের একজন মেধাবী ও ভদ্র শিক্ষার্থী। তার বাবার মৃত্যুতে আমরা সবাই মর্মাহত। তবে তাকে মানসিকভাবে সমর্থন দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে সহায়তা করেছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তৃশা যাতে সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল করতে পারে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা করা হবে।”
মরহুম আব্দুর রাজ্জাকের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্রসন্তানের জনক ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তার জানাজা সম্পন্ন হয়।