আমলা, কুষ্টিয়া | ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ইং।
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ কে বরণ করে নিতে আজ আমলা অঞ্চলে পালিত হলো এক বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর অনুষ্ঠান। আমলা প্রেস ক্লাব, আমলা বাজার কমিটি, আমলা ইউনিয়ন পরিষদ, আমলাসদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমলা জাহানারা বালিকা বিদ্যালয়, ছাত্রজনতা ও সাধারণ শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এ উৎসব প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সকালে এক বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে, যেখানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবি, শাড়ি, আলপনা ও লোকজ বাদ্যযন্ত্রে মুখর ছিল গোটা আমলা বাজার এলাকা।
আমলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি বলেন,
"এমন একটি আয়োজনে সবাইকে একত্রিত করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি।"
[caption id="attachment_2217" align="alignright" width="1024"] ছবি: দৈনিক জনাতারকথা[/caption]
আমলা বাজার কমিটি,
আমলা বাজার কমিটি এক অনবদ্য উৎসব আয়োজন করেছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে আনন্দ ও উৎসাহের সৃষ্টি করেছে। এই উৎসবে সেক্রেটারি মো: রফিকুল ইসলাম তার মূল্যবান বক্তব্যে নববর্ষের গুরুত্ব ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, নববর্ষ শুধু একটি নতুন বছরের শুরু নয়, এটি নতুন আশা, নতুন উদ্যোগ এবং জীবনের নতুন লক্ষ্য অর্জনের সুযোগ। তিনি সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান এবং প্রতিটি মানুষের উন্নতির জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে দেন। তিনি একটি আবাস যোগ্য শান্তিপূর্ণ পৃথিবী কামনা করেন, যেখানে ইজরাইলের মত বর্বর আগ্রাসী রাষ্ট্র থাকবে না। যারা হত্যা করে শিশু বৃদ্ধ নারী নিরিহ মানুষ, শুধুমাত্র ভূখন্ড দখলের প্রত্যাশায়, সে পৃথিবিতে খাকবেনা কোন ফিলিস্থিনিও, যেখানে কাঁদবেনা কোন শিশু একমুঠো খাবারের আশায়, চিৎকার করে বলবেনা খোদা তুমি কোথায়?
এছাড়া, এই দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলা-ধুলা, এবং স্থানীয় স্বাদে ভরপুর খাবারের আয়োজন ছিল, যা আমলা বাজারের বাসিন্দাদের এক উৎসবমুখর পরিবেশে মেতে তুলেছিল। নববর্ষের এই আয়োজন পুরো সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিশেষ দিন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ফিলিস্থিনিদের শিশু বৃদ্ধ নারী নিরিহ মানুষের জন্য বিশেষ দোয়া করেন।
আমলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন,
[caption id="attachment_2219" align="alignright" width="1024"] ছবি: দৈনিক জনাতারকথা[/caption]
"নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎসব। এই দিনে আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে যাই, এটাই আমাদের শক্তি।"
আমলাসদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান,
"শিক্ষার্থীদের মাঝে আমাদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার এটি একটি দারুণ উপলক্ষ। আমরা প্রতিবছরই বড় করে আয়োজন করতে চাই।"
[caption id="attachment_2221" align="alignright" width="1024"] ছবি: দৈনিক জনাতারকথা[/caption]
ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও জানান, নববর্ষের এই উৎসব যেন তাদের জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালায়। ব্যবসায়ী মহলও দিনটিকে উপলক্ষ করে বিশেষ ছাড় ও অফারের আয়োজন করে থাকেন।
আমলা জাহানারা বালিকা বিদ্যালয় ,
"আমি খুব খুশি যে আমাদের এলাকায় এমন উৎসব হচ্ছে। শিশু-কিশোরদের জন্য খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক আয়োজন—এসব তাদের ভেতরের প্রতিভা বের করে আনার সুযোগ দেয়।"
[caption id="attachment_2222" align="alignright" width="1024"] ছবি: দৈনিক জনতারকথা[/caption]
স্থানীয়দের মতামত:
সেলিম ফার্মেসী (৫০), ব্যবসায়ী:
"নববর্ষের এই আয়োজন আমাদের সংস্কৃতির একটা বড় দিক। প্রতিবছর এ উৎসব আমাদের মিলনের এক জায়গা হয়ে দাঁড়ায়। পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ করার সুযোগ পাই। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেন যথাযথ থাকে, সেটাই কাম্য।"
মো: আশিকুলকুল ইসলাম (২৬), কলেজ শিক্ষার্থী:
"বন্ধুদের সঙ্গে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারাটা অসাধারণ লাগে। বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ শোভাযাত্রায়, লোকসংগীতের পরিবেশনা—সব মিলিয়ে একটা অন্যরকম অনুভূতি।
নোমান (৩০) পরিবহন কর্মী:
"নববর্ষে মানুষজন রাস্তায় বের হয়, পরিবহনের চাপ বাড়ে। আয় একটু বাড়ে ঠিকই, তবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাটা আরেকটু গোছানো হলে সবাই উপকৃত হতো।"
সংস্কৃতিক আয়োজন:
অনুষ্ঠানে ছিল লোকসংগীত, নৃত্য পরিবেশনা, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয় বিভিন্ন পরিবেশনায়, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
উৎসবের কিছু মুহূর্ত:
শুভ নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন শুধু আনন্দ বা উৎসব নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি চর্চা ও ঐক্যের এক মহামিলন। এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে অব্যাহত থাকবে—এই প্রত্যাশাই সবার।