০৩:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

বাংলা নববর্ষ এবং আমাদের ঐতিহ্য;

  • সম্পাদকীয়
  • প্রকাশের সময় : ০৪:২৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • 10

সম্পাদকীয়:

বাংলা নববর্ষ, আমাদের জাতীয় জীবনে এক উজ্জ্বল ও গর্বিত ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে আমরা বরণ করি নতুন বাংলা বছরকে। এটি শুধু ক্যালেন্ডারের একটি পরিবর্তন নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতির, চেতনার ও ঐতিহ্যের এক গভীর প্রকাশ। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতিসত্তা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:

বাংলা সনের সূচনা হয়েছিল মুঘল সম্রাট আকবরের সময়ে, রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে। হিজরি ও খ্রিস্টীয় সন গণনায় অসুবিধা থাকায়, বাংলা সন চালু করা হয়েছিল, যা ছিল কৃষিভিত্তিক সমাজের সঙ্গে মানানসই। কালক্রমে এই বর্ষপঞ্জি বাঙালির নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়ে পরিণত হয়।

নববর্ষের উৎসব

পহেলা বৈশাখে পুরো জাতি মিলিত হয় এক বিশাল আনন্দ-উৎসবে। ভোরবেলা সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা, যা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। শহর-বন্দরে মেলা বসে, ঐতিহ্যবাহী পণ্যের পসরা সাজানো হয়। অনেকে পরে থাকে লাল-সাদা পোশাক, কপালে আলপনা আঁকে, এবং পরিবেশিত হয় পান্তা-ইলিশ – যা হয়ে উঠেছে নববর্ষের অন্যতম প্রতীক।

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয়

বাংলা নববর্ষ কেবল উৎসব নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলনও। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আমরা এক প্রাচীন, সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একত্রিত হয়, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক দুর্দান্ত উদাহরণ।

পহেলা বৈশাখ আমাদের আত্মপরিচয়ের এক শক্তিশালী ভিত্তি। এটি বাঙালির চেতনার গভীরে প্রোথিত, যেখানে নিহিত আছে আমাদের সাহিত্য, সংগীত, নৃত্য, চারুকলা ও লোকজ সংস্কৃতির সমন্বয়।

আধুনিক সমাজে নববর্ষের গুরুত্ব

বিভিন্ন প্রযুক্তির ভিড়ে ও পুঁজিবাদী সমাজে আমরা অনেক সময় আমাদের শেকড় ভুলে যাই। বাংলা নববর্ষ আমাদের সেই শিকড়ে ফিরিয়ে নেয়। আজকের তরুণ প্রজন্ম যখন গ্রামীণ মেলা, নকশি কাঁথা, বাঁশের তৈরি সামগ্রী কিংবা ঐতিহ্যবাহী গানের প্রতি আগ্রহী হয়, তখন বোঝা যায় আমাদের ঐতিহ্য এখনো জীবিত।

উপসংহার

বাংলা নববর্ষ শুধু একটি দিনের উৎসব নয়, এটি আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের এক সেতুবন্ধন। এই দিনে আমরা কেবল আনন্দ করি না, প্রতিজ্ঞা করি—আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে লালন করবো, ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবো, এবং জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। বাংলা নববর্ষ হোক আমাদের আত্মউন্নয়নের নতুন প্রেরণা।

শুভ নববর্ষ

জগতি চিনিকলের অপমৃত্যু — আমাদের শিকড়ে কোপ:

রাজশাহীতে হাতকরা পরা অবস্থায় আসামী পলায়ন

কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতার বাসায় গুলি

চুয়াডাঙ্গায় ইয়াবাসহ তিন মাদক কারবারি আটক

নাটোরে ভুট্টা ক্ষেত থেকে শিশু জুঁইয়ের মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পুলিশ

শার্শায় ধানক্ষেত থেকে দুটি পাইপগান উদ্ধার

বৈশাখের সন্ধ্যায় মিনিবাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে শিশু নিহত, বাসে আগুন

নিজেকে ছাত্রলীগ দাবির ৪ বছর পর হয়ে গেলেন ছাত্রদলের আহ্বায়ক

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ওয়ার্ড সুবিধার দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্লট দুর্নীতি: হাসিনা, রেহানা, ববির সঙ্গে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপকে গ্রেপ্তারেও পরোয়ানা

মার্চ ফর গাজা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনস্রোত

এশিয়ার ৩ দেশ সফর করবেন শি জিনপিং

নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ, ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত ৩

চারুকলায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব’ পুড়িয়েছে হাসিনার দোসররা: ফারুকী

সিলেটে ‘গাড়ি পার্কিং’ নিয়ে সংঘর্ষ, ৩১ মোটরসাইকেল ভাঙচুর

কুষ্টিয়ার আমলায় জুমার নামাজ শেষে ফিলিস্তিনের পক্ষে দোয়া ও প্রতিবাদ মিছিল

সম্পাদকীয়

চলতি বছর বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন ডলারের ঋণ দেবে এনডিবি

ইহুদিবাদ এবং গাজার ভবিষ্যৎ: সংঘাতের বৃত্ত থেকে মুক্তির খোঁজে

সারা দেশে দোকানপাট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৪৯ জন গ্রেপ্তার

বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলা নববর্ষ এবং আমাদের ঐতিহ্য;

প্রকাশের সময় : ০৪:২৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পাদকীয়:

বাংলা নববর্ষ, আমাদের জাতীয় জীবনে এক উজ্জ্বল ও গর্বিত ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে আমরা বরণ করি নতুন বাংলা বছরকে। এটি শুধু ক্যালেন্ডারের একটি পরিবর্তন নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতির, চেতনার ও ঐতিহ্যের এক গভীর প্রকাশ। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতিসত্তা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:

বাংলা সনের সূচনা হয়েছিল মুঘল সম্রাট আকবরের সময়ে, রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে। হিজরি ও খ্রিস্টীয় সন গণনায় অসুবিধা থাকায়, বাংলা সন চালু করা হয়েছিল, যা ছিল কৃষিভিত্তিক সমাজের সঙ্গে মানানসই। কালক্রমে এই বর্ষপঞ্জি বাঙালির নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়ে পরিণত হয়।

নববর্ষের উৎসব

পহেলা বৈশাখে পুরো জাতি মিলিত হয় এক বিশাল আনন্দ-উৎসবে। ভোরবেলা সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা, যা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। শহর-বন্দরে মেলা বসে, ঐতিহ্যবাহী পণ্যের পসরা সাজানো হয়। অনেকে পরে থাকে লাল-সাদা পোশাক, কপালে আলপনা আঁকে, এবং পরিবেশিত হয় পান্তা-ইলিশ – যা হয়ে উঠেছে নববর্ষের অন্যতম প্রতীক।

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয়

বাংলা নববর্ষ কেবল উৎসব নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলনও। এই দিনটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আমরা এক প্রাচীন, সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একত্রিত হয়, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক দুর্দান্ত উদাহরণ।

পহেলা বৈশাখ আমাদের আত্মপরিচয়ের এক শক্তিশালী ভিত্তি। এটি বাঙালির চেতনার গভীরে প্রোথিত, যেখানে নিহিত আছে আমাদের সাহিত্য, সংগীত, নৃত্য, চারুকলা ও লোকজ সংস্কৃতির সমন্বয়।

আধুনিক সমাজে নববর্ষের গুরুত্ব

বিভিন্ন প্রযুক্তির ভিড়ে ও পুঁজিবাদী সমাজে আমরা অনেক সময় আমাদের শেকড় ভুলে যাই। বাংলা নববর্ষ আমাদের সেই শিকড়ে ফিরিয়ে নেয়। আজকের তরুণ প্রজন্ম যখন গ্রামীণ মেলা, নকশি কাঁথা, বাঁশের তৈরি সামগ্রী কিংবা ঐতিহ্যবাহী গানের প্রতি আগ্রহী হয়, তখন বোঝা যায় আমাদের ঐতিহ্য এখনো জীবিত।

উপসংহার

বাংলা নববর্ষ শুধু একটি দিনের উৎসব নয়, এটি আমাদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের এক সেতুবন্ধন। এই দিনে আমরা কেবল আনন্দ করি না, প্রতিজ্ঞা করি—আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে লালন করবো, ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবো, এবং জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। বাংলা নববর্ষ হোক আমাদের আত্মউন্নয়নের নতুন প্রেরণা।

শুভ নববর্ষ