
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করা হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ জাসদ।
শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে দলের তরফে এ বক্তব্য তুলে ধরেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন।
তিনি বলেন, “সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেবার চেষ্টার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাবনা গ্রহণযোগ্য নয়। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের উল্লেখের অবশ্যই ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে, সেই সাথে দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষে ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানও তাৎপর্যপূর্ণ।
“নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানকেও সংবিধানে মর্যাদার সাথে উল্লেখ করা প্রয়োজন। সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও ৭ মার্চের ভাষণ অপসারণ আমরা সমর্থন করি না। দেশের নাম বাংলাতে পরিবর্তনকে আমরা অনাবশ্যক মনে করি। সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনী বাতিল থাকবে।”
ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে সংবিধান তুলনীয় নয় মন্তব্য করে মুশতাক হোসেন বলেন, “পবিত্র ধর্মগ্রন্থের সাথে সংবিধান তুলনীয় নয়। তাই সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ও এর বাংলা অনুবাদ রাখাটা সমীচীন নয়।
বাঙালির বাইরে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীকে তুলে ধরতে ‘আদিবাসী’ অভিধাটি তার সংজ্ঞাসহ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ। একইসঙ্গে দলটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়সসীমা কমানোর বিপক্ষে।
নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণের প্রস্তাবে বৈষম্য আরও বাড়বে বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ৷ একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনারদের মেয়াদ পরবর্তীতে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে শাস্তির বিধান- নির্বাচন কমিশনারদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবদ্ধকতা তৈরি করবে বলে মনে করে তারা।
বাংলাদেশকে প্রদেশে বিভক্ত করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব রেখেছে, সেটিকে সময়ের দাবি বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ। সব ক্যাডারের মাঝে সমতা নিশ্চিত করা, কোনো বিশেষ ক্যাডারকে ঔপনিবেশিক আদলে গড়ে তোলার চেষ্টা পরিহার করার পক্ষে মত দেয় বাংলাদেশ জাসদ। জেলা পরিষদ রাখার পক্ষে তারা।